মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩২ অপরাহ্ন

সিলেট



নিজস্ব প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০২৪-০৮-২৩ ০৭:২৭:৫৩


বিশ্বনাথের মাহতাবপুর মাছ বাজারে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া : আহত ২০

কমিটি নিয়ে বিরোধ ও বাজারে আধিপত্য বিস্তারের জের

ঘরের জানালার গ্লাস ভাংচৃর করে প্রতিপক্ষরা

সিলেটের বিশ্বনাথের মাহতাবপুর মাছ বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রথমে শাহপরান মৎস্য আড়তের পরিচালক প্রাক্তণ মেম্বার হেলাল উদ্দিনের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়।

এঘটনাকে কেন্দ্র করে হেলাল উদ্দিন পক্ষ ও বাজারের মাহতাবপুর ক্ষুদ্র মৎস্য আড়তের পরিচালক বশির উদ্দিন পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষে ২০জন আহত হন। তাদের মধ্যে ১৬জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট) সন্ধ্যায় মাহতাবপুর গ্রামে এঘটান ঘটে।

এর আগে বিকেলে গ্রামের প্রাক্তণ মেম্বার হেলাল উদ্দিনের বাড়িতে হামলা করা হয়। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, মাহতাবপুর মাছ বাজারের কমিটি নিয়ে বাজারের হেলাল উদ্দিন মেম্বার পক্ষ এবং বশির উদ্দিন পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে উভয় পক্ষে উচ্চ আদালসহ সিলেটের একাধিক আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে।

বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রথমে হেলাল মেম্বারের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়।

এই ঘটাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় দু’পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ইটপাটকেল ও রামধার আঘাতে হেলাল পক্ষের খলিলুর রহমান, আলিম উদ্দিন, ছালেহ আহমদ, জাবির আহমদ, জাকারিয়া আহমদ, শাহেদ আহমদ, আবু-সালেহ, হেলাল মিয়া, নজির মিয়া, বশির আহমদসহ ১৪জন এবং বশির উদ্দিন পক্ষের সবুজ মিয়া, এনাথ উল্লাহ, আলীনুর, মাসুদ আহমদ, নুরুল হক, সজিবসহ ৬জন আহত হন।

এসময় সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে আড়াই ঘন্টা যানচলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে থানা ছাতক ও বিশ্বনাথের দায়িত্বে থাকা সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর রাতে বিশ্বনাথ থানা পুলিশও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন মেম্বার জানান, তার প্রতিপক্ষ মাহতাবপুর গ্রামের বশির উদ্দিন তাদের পক্ষের আখলুছ মিয়া, জসিম উদ্দিন মেম্বার, সবুজ মিয়া, ইদ্রিছ আলী ইমানী, নেছার মেম্বার, জিয়া উদ্দিন, নওশাদ মিয়া, নুরুল হকসহ ১৫/২০জনকে নিয়ে তার বসত বাড়িতে হামলা করেন।

এসময় ঘরে থাকা নগদ সাড়ে ৫লাখ টাকা, ৩ভরি স্বর্ণালংকার, ৩টি আইফোন ও বসত ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে ফেলে যায় তারা। এতে নেতৃত্ব দেন লামাকাজী ইউনয়িনের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া ও রামপাশা ইউনয়ন চেয়ারম্যান ফকির ইমাম উদ্দিন।

হমলার কারণ জানতে চাইলে হেলাল মেম্বার অভিযোগ করে বলেন, গত ১৯ আগষ্ট বিকেলে প্রতিপক্ষের ওই লোকজন মৎস্য আড়তের ৩দোকান ভাংচুর করে। এই ঘটনার পরে থানায় এজাহার দায়ের করলে ক্ষুব্দ হয়ে তার বাড়িতে এই হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায় তার প্রতিপক্ষ।

এবিষয়ে ব্যবসায়ী বশির উদ্দিন বলেন, হেলাল উদ্দিন পক্ষ হামলা চালিয়ে তাদের দোকানপাট দখল করতে চেয়েছিল। এরপর তাদেরকে ফাঁসানোর জন্য নিজেই নিজের বসত বাড়িতে হামলা করিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর করে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন হেলাল মেম্বার।

লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন, ঘটনারদিন তিনি এলাকাতেই ছিলেননা। যে বা যারা হামলা করেছে তিনি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির ইমাম উদ্দিন উল্টো হেলাল উদ্দিনকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, হেলাল মেম্বার মাছা বাজারে গিয়ে তার দোকান দখল করতে চেয়েছেন। অসুস্থ থাকায় তিনি মাছা বাজারে যেতে না পারায় বাড়িতে বিছানায় শুয়ে আছেন।

বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, হামলার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছেন। এ ঘটনায় মামলা দেওয়া হলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান তিনি।


ডেসিস/জেকে/২৩ আগষ্ট ২০২৪ইং

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Sidebar Google Ad Code