রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৯ অপরাহ্ন

সিলেট



নিজস্ব প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২০২৫-০২-১৯ ০৮:২১:০৮


আ’লীগ পরিবারকে এখনও মদদ দিচ্ছে পুলিশ, অভিযোগ প্রবাসীর

সিংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন ফিরোজ মিয়া।

সিলেটের বিশ্বনাথে মসজিদের ক্যাশেরর হিসাব চাওয়ায় আওয়ামী লীগ পরিবারের একাধিক হামলা ও মামলায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এক সৌদি আরব প্রবাসী পরিবার। এমনকি দীর্ঘ ৮মাস ধরে মসজিদেও যেতে পারছেননা তারা। আওয়ামী লীগের আমলে যতবার হামলার শিকার হয়েছেন তথবার বিশ্বনাথ থানার তৎকালীণ ওসি গাজী আতাউর ররহমান ওই প্রভাবশালী পরিবারকে মদদ দিয়েছেন। বর্তমানেও মামলা না নিয়ে ওই পরিবারকেই মদদ দিচ্ছে পুলিশ।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন ফিরোজ মিয়া নামের এক সৌদী প্রবাসী। তিনি উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের ধলিপাড়া (শেখপাড়া) গ্রামের মৃত শমসের আলী মাস্টারের ছেলে। আর তার প্রতিপক্ষরাও একই গ্রামের বসিন্দা। তারা হলেন, গ্রামের মসজিদের ক্যাশিয়ার ছালেক মিয়া, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছকির মিয়া ও আশিক মিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফিরোজ বলেন, ২০২৩সালে আমাদের গ্রামের সমজিদের মোতাওয়াল্লী আলতাব মিয়া লন্ডনে যাওয়ার পূর্বে তিনি তার চাচাত ভাই ছালেক মিয়াকে ক্যাশিয়ার অর্থাৎ ভারপ্রাপ্ত মোতাওয়াল্লীর দায়িত্ব দিয়ে যান। এরপর মসজিদের আয়ব্যয় হিসাব চাওয়া হলে উভয় পক্ষে দ্বন্দের সৃস্টি হয়। এরই জেরে ওই বছরের ৩১আগষ্ট বিকেলে তার চাচাতো ভাই সাদ্দাম হোসেনের উপর হামলা করা হয়। হামলার পর হাসপাতালে নিতেও তারা বাঁধা দেন। অনেক কষ্ট করে বিকল্প পথে মুমুর্ষ অবস্থায় আহত সাদ্দামকে সিলেট ওসামনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে থানায় এজহার দায়ের করতে গেলে তৎকালীণ ওসি গাজী আতাউর রহমান মমালা না নিয়ে বলেন আছকির মিয়া, আশিক মিয়া ও মসজিদের ক্যাশিয়ার ছালেক মিয়া ওরা সরকার পক্ষের লোক। উপর থেকে বাধা নিষেধও আছে তাই মামলা নিতে পারবো না। এরপর তিনি সিলেট আাদলতে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে আদালত আসামি গ্রেপ্তার পূর্বক ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বরং তাদের বিরুদ্ধে কাউন্টার হিসেবে একটি মামলা থানায় রুজ্জু করা হয়, মামলা নং ৩৪, (মামলার জিআর নং-১০৮/২৩ইং)।

ফিরোজ বলেন, গত ৩বছর আগে দেশে ফেরেন। কিন্তু প্রতিপেক্ষর হামলা ও একাধিক মামলার কারণে তিনি আর সৌদী আরব যেতে পারেন নি। বর্তমানে প্রতিপক্ষ ও পুলিশের ভয়ে বাড়ি ছাড়া রয়েছেন। এমনকি ভয়ে তারা তাদের ছেলে মেয়েদেরও স্কুল কলেজে যেতে দিচ্ছেন না। এমনকি চলতি ২০২৫ সালের গত ৮ ফেব্রুয়ারি তার ভাতিজা ফারুক আহমদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার বমত ঘর ভাংচুর করা হয়। পরদিন ৯ফেব্রুয়ারি প্রতিপক্ষের ১৬জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও পুলিশ দীর্ঘ ১১দিনেও মামলা নেয়নি। তার দাবি, দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও বিশ্বনাথে চলছে উল্টো চিত্র। থানা পুলিশও ওই আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্যদের মদদ দিচ্ছে। এপর্যন্ত বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত রয়েছেন বলেও জানান প্রবাসী ফিরোজ।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মসজিদসহ গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’টি পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন গ্রামের লোকজন। যার এক পক্ষে রয়েছেন সৌদী প্রবাসী ফিরোজ মিয়া আর অন্য পক্ষে রয়েছেন মসজিদের ক্যাশিয়ার ছালেক মিয়া ও তার পক্ষের আছকির মিয়া ও আশিক মিয়া। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হামলা পাল্টা হামলা ও মারামারির ঘটনায় উভয় পক্ষে ডজন খানেক মামলা রয়েছে।

প্রতিপক্ষ ও মসজিদের ক্যাশিয়ার ছালেক মিয়া বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং তিনি আওয়ামী লীগও করেননা। ঢাকায় চাকুরি করেন জানিয়ে তিনি বলেন, হিসাব চাওয়ার পরই তিনি হিসাব দিয়েছেন। কিন্তু সম্পুর্ণ উল্টো বিষয়টি তার বিরুধী পক্ষ সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেছেন, যা সঠিক নয়। এ

প্রসঙ্গে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ  (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, এজাহারের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে, অভিযোগ সত্য হলে অবশ্যই মামলা রুজ্জু করা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


ডেসিস/জেকে/১৯ ফেব্রুয়ারি এপ্রিল ২০২৫ইং

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Sidebar Google Ad Code